Carbamide Peroxide

সারসংক্ষেপ

কার্বামাইড পারক্সাইড (Carbamide Peroxide) একটি রাসায়নিক যৌগ যা হাইড্রোজেন পারক্সাইড এবং ইউরিয়ার সমন্বয়ে গঠিত। এটি প্রধানত দুটি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়: দাঁত সাদা করার জন্য (teeth whitening) এবং কানের খৈল বা ওয়াক্স (earwax) নরম করে বের করে দেওয়ার জন্য। এটি যখন পানির সংস্পর্শে আসে, তখন এটি ভেঙে গিয়ে হাইড্রোজেন পারক্সাইড নিঃসরণ করে, যা এর মূল কার্যকারিতার কারণ। এটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) পণ্য হিসেবে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়।

ব্যাকগ্রাউন্ড

কার্বামাইড পারক্সাইড দীর্ঘদিন ধরে একটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মুখের স্বাস্থ্যবিধানে এর ব্যবহার শুরু হয় যখন দেখা যায় যে এটি মুখের ঘা এবং মাড়ির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দাঁতকেও সাদা করে। এই আবিষ্কারের পর থেকে এটি ডেন্টাল ব্লিচিং বা দাঁত সাদা করার এজেন্ট হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কানের খৈল নরম করার জন্যও এর ব্যবহার সুপ্রতিষ্ঠিত।

ইঙ্গিত

কার্বামাইড পারক্সাইড নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত:

  • দাঁত সাদা করা: বাহ্যিক দাগ (extrinsic stains) দূর করে দাঁতের রঙ উজ্জ্বল করার জন্য।
  • কানের খৈল অপসারণ: কানে জমে থাকা শক্ত খৈল নরম করে তা বের করে দেওয়ার জন্য।
  • মুখের স্বাস্থ্য: মাঝে মাঝে মুখের ছোটখাটো ঘা বা মাড়ির প্রদাহের জন্য অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

Associated Conditions

এটি ডেন্টাল ক্লিনিকে পেশাদার ব্লিচিং প্রক্রিয়ায় এবং বাড়িতে ব্যবহারের জন্য তৈরি কিট-এ পাওয়া যায়। কানের সমস্যার ক্ষেত্রে, এটি ইম্প্যাক্টেড সেরুমেন (impacted cerumen) বা কানে শক্ত খৈল জমার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

বিরোধীতা এবং ব্ল্যাকবক্স সতর্কতা

যাদের কার্বামাইড পারক্সাইড বা হাইড্রোজেন পারক্সাইডের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা বা অ্যালার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে না। কানের পর্দায় ছিদ্র থাকলে বা কানে সংক্রমণ থাকলে কানের ড্রপ হিসেবে এটি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। এর কোনো নির্দিষ্ট ব্ল্যাকবক্স সতর্কতা নেই।

ফার্মাকোডাইনামিক্স

কার্বামাইড পারক্সাইড একটি অক্সিডাইজিং এজেন্ট। এটি হাইড্রোজেন পারক্সাইড নিঃসরণ করে, যা পরে মুক্ত র‍্যাডিকেলে (free radicals) ভেঙে যায়। এই মুক্ত র‍্যাডিকেলগুলো দাঁতের এনামেল এবং ডেন্টিনের মধ্যে থাকা রঙিন জৈব অণুগুলোকে অক্সিডাইজ করে বর্ণহীন যৌগে পরিণত করে, যার ফলে দাঁত সাদা হয়। কানের ক্ষেত্রে, এটি অক্সিজেন মুক্ত করে ফেনা তৈরি করে, যা কানের শক্ত খৈলকে নরম ও ভঙ্গুর করে তোলে।

কর্ম প্রক্রিয়া

পানির সংস্পর্শে আসার পর, কার্বামাইড পারক্সাইড ধীরে ধীরে হাইড্রোজেন পারক্সাইড এবং ইউরিয়াতে বিশ্লিষ্ট হয়। প্রায় ১০% কার্বামাইড পারক্সাইড দ্রবণ প্রায় ৩.৫% হাইড্রোজেন পারক্সাইড দ্রবণের সমতুল্য। এই হাইড্রোজেন পারক্সাইডই সক্রিয় উপাদান হিসেবে কাজ করে। দাঁতের ক্ষেত্রে, এটি এনামেলের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে দাগ সৃষ্টিকারী অণুগুলোকে ভেঙে ফেলে। কানের ক্ষেত্রে, এটি অক্সিজেন বুদবুদ তৈরি করে যান্ত্রিকভাবে খৈলকে আলগা করে দেয়।

মাত্রা

  • দাঁত সাদা করার জেল: সাধারণত ১০% থেকে ৩৫% ঘনত্বের জেল পাওয়া যায়।
  • কানের ড্রপ: সাধারণত ৬.৫% ঘনত্বের দ্রবণ।

সেবনবিধি

দাঁত সাদা করার জন্য:
১. প্রথমে দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করে পরিষ্কার করে নিন।
২. ডেন্টাল ট্রে-এর মধ্যে নির্ধারিত পরিমাণে জেল প্রয়োগ করুন।
৩. ট্রে-টি দাঁতের উপর ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এবং অতিরিক্ত জেল মুছে ফেলুন।
৪. পণ্যের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় (সাধারণত ৩০ মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা) পরে থাকুন।
৫. ব্যবহারের পর মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এবং ট্রে-টি পরিষ্কার করে রাখুন।
কানের খৈল অপসারণের জন্য:
১. মাথা একপাশে কাত করুন যাতে কানটি উপরের দিকে থাকে।
২. কানের ড্রপার ব্যবহার করে ৫ থেকে ১০ ফোঁটা দ্রবণ কানের খালে প্রবেশ করান।
৩. কয়েক মিনিট মাথা কাত করে রাখুন যাতে দ্রবণটি খৈলের সংস্পর্শে আসতে পারে।
৪. এই প্রক্রিয়াটি কয়েক দিন ধরে দিনে দুইবার পুনরাবৃত্তি করুন।

কাজ করতে কত সময় লাগে?

দাঁত সাদা করার ক্ষেত্রে, কয়েক দিন ব্যবহারের পর প্রাথমিক ফলাফল দেখা যেতে পারে, তবে সম্পূর্ণ প্রভাব দেখতে ২ থেকে ৪ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। কানের খৈল নরম হতে ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগতে পারে।

শোষণ

টপিক্যাল ব্যবহারে এর শোষণ খুবই নগণ্য। দাঁত বা ত্বকের মাধ্যমে এটি সিস্টেমিক সঞ্চালনে প্রায় প্রবেশ করে না বললেই চলে।

বিতরণের পরিমাণ

যেহেতু এটি স্থানীয়ভাবে কাজ করে এবং শোষিত হয় না, তাই এর বিতরণের পরিমাণ প্রযোজ্য নয়।

প্রোটিন বাইন্ডিং

প্রযোজ্য নয়।

বিপাক

এটি স্থানীয়ভাবে হাইড্রোজেন পারক্সাইড এবং ইউরিয়াতে বিপাকিত হয়। হাইড্রোজেন পারক্সাইড দ্রুত পানি এবং অক্সিজেনে পরিণত হয়।

অর্ধ জীবন

প্রযোজ্য নয়।

নির্মূল

এর বিপাকীয় অবশিষ্টাংশগুলো স্থানীয়ভাবে অপসারিত হয় বা শরীর দ্বারা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

ঔষধের মিথস্ক্রিয়া

এর সাথে অন্য কোনো ঔষধের ক্লিনিক্যালি উল্লেখযোগ্য মিথস্ক্রিয়ার কোনো প্রমাণ নেই।

রোগ মিথস্ক্রিয়া

যাদের মাড়ির রোগ (যেমন: জিঞ্জিভাইটিস, পেরিওডোনটাইটিস), দাঁতে ক্যাভিটি বা ভাঙা দাঁত আছে, তাদের ক্ষেত্রে দাঁত সাদা করার পণ্য ব্যবহারে সংবেদনশীলতা বাড়তে পারে। কানের পর্দায় ছিদ্র থাকলে কানের ড্রপ ব্যবহার করা যাবে না।

খাদ্য মিথস্ক্রিয়া

দাঁত সাদা করার প্রক্রিয়া চলাকালীন এবং তার কিছুদিন পর পর্যন্ত কফি, চা, রেড ওয়াইন বা অন্যান্য রঙিন খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন, কারণ এই সময়ে দাঁত পুনরায় দাগ শোষণ করার জন্য বেশি সংবেদনশীল থাকে।

ব্যবহারের দিকনির্দেশনা

দাঁত সাদা করার পণ্য ব্যবহারের আগে নিশ্চিত করুন যে আপনার দাঁতে কোনো ক্যাভিটি বা মাড়ির রোগ নেই। ব্যবহারের সময় মাড়িতে জ্বালা বা দাঁতে সংবেদনশীলতা অনুভব করলে ব্যবহার বন্ধ করুন বা ব্যবহারের সময় কমিয়ে দিন। কানের ড্রপ ব্যবহারের পর যদি কানে ব্যথা, মাথা ঘোরা বা শোনার ক্ষমতা কমে যায়, তবে ব্যবহার বন্ধ করে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। কোনো পণ্যই গিলে ফেলা উচিত নয়।

প্রতিনির্দেশনা

হাইড্রোজেন পারক্সাইডের প্রতি অ্যালার্জি, কানের পর্দায় ছিদ্র এবং মুখের গুরুতর ঘা বা সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে না।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

দাঁত সাদা করা: দাঁতের সাময়িক সংবেদনশীলতা এবং মাড়িতে জ্বালা বা সাদা হয়ে যাওয়া।
কানের ড্রপ: কানে বুদবুদ ওঠার শব্দ, সাময়িক শোনার ক্ষমতা হ্রাস এবং ত্বকে হালকা জ্বালা।

বিরূপ প্রভাব

অতিরিক্ত বা ভুল ব্যবহারে দাঁতের এনামেলের স্থায়ী ক্ষতি বা মাড়ির গুরুতর জ্বালা হতে পারে। কানের পর্দায় ছিদ্র থাকলে এটি মধ্যকর্ণে প্রবেশ করে গুরুতর ক্ষতি করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ব্যবহার

গর্ভাবস্থায় দাঁত সাদা করার পণ্য ব্যবহারের নিরাপত্তা নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নেই, তাই এই সময়ে এটি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। কানের ড্রপ প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্তন্যদানকালে ব্যবহার

স্তন্যদানকালে এর ব্যবহার সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হয়, কারণ এর সিস্টেমিক শোষণ প্রায় শূন্য।

বিষাক্ততা

গিলে ফেললে এটি মুখ, গলা এবং পাকস্থলীতে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণ গিলে ফেলা বিপজ্জনক হতে পারে।

সতর্কতা

এই পণ্যগুলো শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য। চোখ বা ত্বকের সংস্পর্শে এলে প্রচুর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করার আগে ডেন্টিস্ট বা চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।

মাত্রাধিক্যতা

স্থানীয়ভাবে মাত্রাধিক্য ব্যবহারে তীব্র জ্বালা হতে পারে। গিলে ফেলার ক্ষেত্রে, বমি বমি ভাব এবং পেটের অস্বস্তি হতে পারে।

বিপরীত

এর কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষেধক (antidote) নেই। চিকিৎসা মূলত উপসর্গভিত্তিক এবং সহায়ক ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল।

সংরক্ষণ

পণ্যটি একটি শীতল, শুষ্ক স্থানে, সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে রাখুন। দাঁত সাদা করার জেলগুলো ফ্রিজে রাখলে এর কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয়। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

ব্যবহার

কানের অতিরিক্ত মোম

Carbamide Peroxide এর দাম কত? Carbamide Peroxide এর দাম

Carbamide Peroxide in Bangla
Carbamide Peroxide in bangla
বাণিজ্যিক নাম Carbamide Peroxide
জেনেরিক Carbamide peroxide
ধরণ Otic solution, otic
পরিমাপ 6.5%
দাম
চিকিৎসাগত শ্রেণি
উৎপাদনকারী
উপলভ্য দেশ United States
সর্বশেষ সম্পাদনা January 7, 2025 at 1:49 am

খাওয়ার নিয়ম / ব্যবহারের নিয়ম

Carbamide Peroxide খাওয়ার নিয়ম / ব্যবহারের নিয়ম

আরো বিস্তারিত দেখুন Carbamide Peroxide

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সতর্কতা

মিথস্ক্রিয়া

গর্ভাবস্থাকালীন ব্যবহার

বৈপরীত্য

অতিরিক্ত সতর্কতা

তীব্র ওভারডোজ

অন্যান্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া

সংরক্ষণ

*** Taking medicines without doctor's advice can cause long-term problems.
Share