Idofnib

সারসংক্ষেপ

নিনটেডানিব (Idofnib) একটি টার্গেটেড থেরাপি ঔষধ যা টাইরোসিন কাইনেজ ইনহিবিটর (tyrosine kinase inhibitor) শ্রেণীর অন্তর্গত। এটি প্রধানত ফুসফুসের কিছু ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, যেখানে ফুসফুসের টিস্যু শক্ত হয়ে যায় (ফাইব্রোসিস)। এটি ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস (IPF), সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস-সম্পর্কিত ইন্টারস্টিশিয়াল লাং ডিজিজ (SSc-ILD) এবং প্রগ্রেসিভ ফেনোটাইপ সহ অন্যান্য ক্রনিক ফাইব্রোজিং ইন্টারস্টিশিয়াল লাং ডিজিজের (ILD) চিকিৎসায় কার্যকর। এটি ফাইব্রোসিস প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত নির্দিষ্ট সিগন্যালিং পাথওয়েকে বাধা দিয়ে রোগের অগ্রগতিকে ধীর করে দেয়।

ব্যাকগ্রাউন্ড

নিনটেডানিব মূলত একটি ক্যান্সার-বিরোধী ঔষধ হিসেবে বিকশিত হয়েছিল, কারণ এটি টিউমারের রক্তনালী তৈরি (angiogenesis) প্রক্রিয়াকে বাধা দিতে পারে। তবে, গবেষণায় দেখা যায় যে এটি ফাইব্রোব্লাস্ট নামক কোষের বৃদ্ধি এবং কার্যকলাপকেও বাধা দিতে পারে, যা ফুসফুসের ফাইব্রোসিসের জন্য দায়ী। এই আবিষ্কারের পর, এটি ২০১৪ সালে ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিসের (IPF) চিকিৎসার জন্য প্রথম অনুমোদন পায়।

ইঙ্গিত

নিনটেডানিব নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত:

  • ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস (IPF): এই রোগের অগ্রগতি ধীর করতে।
  • সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস-সম্পর্কিত ইন্টারস্টিশিয়াল লাং ডিজিজ (SSc-ILD): এই অবস্থায় ফুসফুসের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার হার কমাতে।
  • ক্রনিক ফাইব্রোজিং ইন্টারস্টিশিয়াল লাং ডিজিজ উইথ এ প্রগ্রেসিভ ফেনোটাইপ: অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী ফাইব্রোজিং ফুসফুসের রোগের অগ্রগতি কমাতে।

Associated Conditions

এটি সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস বা স্ক্লেরোডার্মার মতো অটোইমিউন রোগের সাথে সম্পর্কিত ফুসফুসের জটিলতার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

বিরোধীতা এবং ব্ল্যাকবক্স সতর্কতা

যাদের নিনটেডানিব বা এর কোনো উপাদানের প্রতি (যেমন: সয়া বা পিনাট) গুরুতর অতিসংবেদনশীলতা বা অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে না। এর কোনো নির্দিষ্ট ব্ল্যাকবক্স সতর্কতা নেই, তবে লিভারের ক্ষতি এবং ভ্রূণের বিষাক্ততার ঝুঁকি সম্পর্কে গুরুতর সতর্কতা রয়েছে।

ফার্মাকোডাইনামিক্স

নিনটেডানিব একটি ট্রিপল টাইরোসিন কাইনেজ ইনহিবিটর। এটি ভাস্কুলার এন্ডোথেলিয়াল গ্রোথ ফ্যাক্টর রিসেপ্টর (VEGFR), ফাইব্রোব্লাস্ট গ্রোথ ফ্যাক্টর রিসেপ্টর (FGFR), এবং প্লেটলেট-ডিরাইভড গ্রোথ ফ্যাক্টর রিসেপ্টর (PDGFR) নামক তিনটি প্রধান রিসেপ্টরকে বাধা দেয়। এই রিসেপ্টরগুলো ফাইব্রোব্লাস্ট কোষের বৃদ্ধি, স্থানান্তর এবং রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কর্ম প্রক্রিয়া

ফুসফুসের ফাইব্রোসিস প্রক্রিয়ায় ফাইব্রোব্লাস্ট কোষগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে কোলাজেন এবং অন্যান্য এক্সট্রা সেলুলার ম্যাট্রিক্স তৈরি করে, যার ফলে ফুসফুসের টিস্যু শক্ত ও অকার্যকর হয়ে পড়ে। নিনটেডানিব VEGFR, FGFR, এবং PDGFR রিসেপ্টরকে ব্লক করে ফাইব্রোব্লাস্টগুলোর কার্যকলাপকে বাধা দেয়। এর ফলে, ফাইব্রোসিস প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা হ্রাসের গতি কমে আসে।

মাত্রা

সাধারণ মাত্রা হলো ১৫০ মিলিগ্রামের একটি ক্যাপসুল দিনে দুইবার, প্রায় ১২ ঘন্টার ব্যবধানে। কিছু ক্ষেত্রে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে মাত্রা কমিয়ে ১০০ মিলিগ্রাম দিনে দুইবার করা হতে পারে।

সেবনবিধি

ক্যাপসুলটি খাবারের সাথে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে সম্পূর্ণ গিলে ফেলুন। এটি চিবানো, ভাঙা বা গুঁড়ো করা যাবে না, কারণ এটি মুখের ভেতরে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে এবং এর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। প্রতিদিন প্রায় একই সময়ে (সকালে এবং সন্ধ্যায়) ঔষধটি গ্রহণ করুন। যদি একটি ডোজ নিতে ভুলে যান, তবে সেই ডোজটি আর গ্রহণ করবেন না। পরবর্তী ডোজটি নির্ধারিত সময়ে গ্রহণ করুন। ভুলে যাওয়া ডোজ পূরণের জন্য একসাথে দুটি ডোজ গ্রহণ করবেন না।

কাজ করতে কত সময় লাগে?

এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা। এর কার্যকারিতা তাৎক্ষণিকভাবে বোঝা যায় না, বরং এটি কয়েক মাস বা বছর ধরে রোগের অগ্রগতিকে ধীর করে দেয়। এর প্রভাব ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষার (pulmonary function test) মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

শোষণ

মুখে সেবনের পর এটি পরিপাকতন্ত্র থেকে শোষিত হয়। খাবারের সাথে গ্রহণ করলে এর শোষণ এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

বিতরণের পরিমাণ

এর বিতরণের পরিমাণ (Volume of distribution) অনেক বেশি, যা নির্দেশ করে যে এটি শরীরের টিস্যুতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রোটিন বাইন্ডিং

এটি প্লাজমা প্রোটিনের সাথে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় (প্রায় ৯৮%) আবদ্ধ থাকে।

বিপাক

এটি প্রধানত এস্টারেজ (esterase) নামক এনজাইমের মাধ্যমে বিপাকিত হয়। CYP450 এনজাইম সিস্টেম এর বিপাকে খুব সামান্য ভূমিকা পালন করে।

অর্ধ জীবন

এর এলিমিনেশন হাফ-লাইফ (অর্ধ-জীবন) প্রায় ৯.৫ ঘন্টা।

নির্মূল

এটি প্রধানত পিত্তরসের মাধ্যমে মলের সাথে (প্রায় ৯৩%) শরীর থেকে নির্গত হয়। খুব সামান্য পরিমাণ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়।

ঔষধের মিথস্ক্রিয়া

পি-গ্লাইকোপ্রোটিন (P-gp) ইনহিবিটর (যেমন: কিটোকোনাজোল, এরিথ্রোমাইসিন) নিনটেডানিবের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। পি-গ্লাইকোপ্রোটিন ইন্ডুসার (যেমন: রিফাম্পিন, সেন্ট জন'স ওয়ার্ট) এর কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেন্ট বা রক্ত পাতলা করার ঔষধের সাথে ব্যবহারে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

রোগ মিথস্ক্রিয়া

মাঝারি থেকে গুরুতর লিভারের সমস্যাযুক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। যাদের রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি আছে বা সাম্প্রতিক হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে সতর্কতা প্রয়োজন।

খাদ্য মিথস্ক্রিয়া

এই ঔষধটি অবশ্যই খাবারের সাথে গ্রহণ করতে হবে। এটি ঔষধের শোষণকে প্রায় ২০% বাড়িয়ে দেয় এবং ডায়রিয়ার মতো হজমজনিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে।

ব্যবহারের দিকনির্দেশনা

আপনার যদি লিভারের কোনো সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসা শুরুর আগে চিকিৎসককে জানান। চিকিৎসা চলাকালীন নিয়মিত লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) করা আবশ্যক। ডায়রিয়া এই ঔষধের একটি খুব সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া; তাই ডায়রিয়া-বিরোধী ঔষধ (যেমন: লোপেরামাইড) হাতের কাছে রাখুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পান করুন। তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী বমি, বমি বমি ভাব বা পেটে ব্যথা হলে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নিন। এই ঔষধ গ্রহণকালে এবং শেষ ডোজের পর কমপক্ষে ৩ মাস পর্যন্ত কার্যকর গর্ভনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার করুন।

প্রতিনির্দেশনা

নিনটেডানিব, পিনাট বা সয়ার প্রতি পরিচিত অতিসংবেদনশীলতা থাকলে এবং গুরুতর লিভারের সমস্যা থাকলে এটি ব্যবহার করা যাবে না।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, বমি, পেটে ব্যথা, লিভারের এনজাইম বৃদ্ধি, ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং ওজন হ্রাস।

বিরূপ প্রভাব

গুরুতর বিরূপ প্রভাবের মধ্যে রয়েছে ঔষধ-জনিত লিভারের ক্ষতি, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল পারফোরেশন (অন্ত্রে ছিদ্র), থ্রম্বোএম্বোলিক ইভেন্ট (রক্ত জমাট বাঁধা), এবং রক্তপাত।

গর্ভাবস্থায় ব্যবহার

এটি গর্ভাবস্থায় কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, কারণ এটি ভ্রূণের গুরুতর ক্ষতি বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

স্তন্যদানকালে ব্যবহার

এটি মায়ের বুকের দুধে নিঃসৃত হয় কিনা তা নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। শিশুর উপর গুরুতর ঝুঁকির কারণে চিকিৎসা চলাকালীন স্তন্যপান করানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

বিষাক্ততা

এর বিষাক্ততা মূলত লিভার এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের উপর প্রভাবের সাথে সম্পর্কিত।

সতর্কতা

লিভারের কার্যকারিতা, ডায়রিয়া এবং রক্তপাতের ঝুঁকির উপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। ধূমপান এর কার্যকারিতা কমাতে পারে, তাই ধূমপান বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

মাত্রাধিক্যতা

মাত্রাধিক্যতার ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এক্ষেত্রে ঔষধ গ্রহণ বন্ধ করা হয় এবং সহায়ক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

বিপরীত

এর কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষেধক (antidote) নেই।

সংরক্ষণ

ঔষধটি ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় (২৫° সেলসিয়াসের নিচে), আর্দ্রতা ও আলো থেকে দূরে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

ব্যবহার

ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস (আইপিএফ), শ্বাসযন্ত্রের ক্রিয়া প্রতিবন্ধী, অ্যাডেনোকার্সিনোমা দ্বারা সৃষ্ট স্থানীয়ভাবে উন্নত নন-স্মল সেল লাং ক্যান্সার (এনএসসিএলসি), অ্যাডেনোকার্সিনোমা দ্বারা সৃষ্ট স্থানীয়ভাবে পুনরাবৃত্ত নন-স্মল সেল ফুসফুস ক্যান্সার (NSCLC), মেটাস্ট্যাটিক নন-স্মল সেল লাং ক্যান্সার (NSCLC) অ্যাডেনোকার্সিনোমা দ্বারা সৃষ্ট

Idofnib এর দাম কত? Idofnib এর দাম

Idofnib in Bangla
Idofnib in bangla
বাণিজ্যিক নাম Idofnib
জেনেরিক Nintedanib
ধরণ Capsule
পরিমাপ
দাম
চিকিৎসাগত শ্রেণি
উৎপাদনকারী Lupin
উপলভ্য দেশ India
সর্বশেষ সম্পাদনা January 7, 2025 at 1:49 am

খাওয়ার নিয়ম / ব্যবহারের নিয়ম

Idofnib খাওয়ার নিয়ম / ব্যবহারের নিয়ম

আরো বিস্তারিত দেখুন Idofnib

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সতর্কতা

মিথস্ক্রিয়া

গর্ভাবস্থাকালীন ব্যবহার

বৈপরীত্য

অতিরিক্ত সতর্কতা

তীব্র ওভারডোজ

অন্যান্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া

সংরক্ষণ

*** Taking medicines without doctor's advice can cause long-term problems.
Share